সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র কিভাবে ক্রয় করবে, ক্রয় করার জন্য কি ডকুমেন্ট লাগে, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা হার কত, সঞ্চয়ের মুনাফা কখন উত্তোলন করবো এবং সঞ্চয়পত্র কিভাবে বন্ধ করবো এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
সঞ্চয়পত্র হচ্ছে সাধারণ জনগণ তাদের অর্থ নির্দিষ্ট মেয়াদে বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতে বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন। সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ও বিভিন্ন তফসিলিভুক্ত ব্যাংকের সঞ্চয়পত্র বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত হয়।
যদি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঞ্চয়পত্রের নিয়মকানুন পরিবর্তন করতে চায় তাহলে তা করতে পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়া অন্যান ব্যাংক এই সকল নীতিমালা পরিবর্তন করতে পারবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক সঞ্চয়পত্রের অনেকগুলো স্কিম চালু করেছেন, তা মধ্যে মোটামুটি ৪ টি স্কিম এখনো চালু রয়েছে।
এই আর্টিকেলে আমরা সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর মুনাফার হার, কি কি লাগবে, উত্তোলন ও ভাঙ্গানোর নিয়ম ইত্যাদি নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করবো।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র কোন ব্যাংক বিক্রি করে?
- সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র কোন ব্যাংক বিক্রি করে?
- সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর নিয়মাবলী
- সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র মুনাফার হার
- ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
- পরিবার সঞ্চয়পত্র
- ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
- পেনশনার সঞ্চয়পত্র
- কোন প্রকার সঞ্চয়পত্রে কত টাকা বিনিয়োগ করা যায় ?
- সঞ্চয়পত্রের মুনাফা উত্তোলন
- সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর জন্য দরকারি কাগজপত্র
- সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানোর নিয়ম
- শেষকথা
বাংলাদেশের তফসিলিভুক্ত সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক কিন্তু ইসলামী ব্যাংক বাদ দিয়ে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সকল শাখা, পোস্ট অফিস এবং বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ইত্যাদি থেকে আপনি সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সকল সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু সঞ্চয় কার্যক্রম সহজ করতে সঞ্চয় বিক্রিয় দায়িত্ব নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাদ দিয়ে সকল তফসিলিভুক্ত ব্যাংক।
তাই আপনি সোনালী ব্যাংক থেকে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন। তাছাড়া সোনালী ব্যাংকা ছাড়াও প্রায় সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জে এই ব্যাংকের শাখা রয়েছে, তাই আপনার ক্ষেত্রে ভালো হবে সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ক্রয়করা।
আপনি সঞ্চয়পত্র সম্বলিত যেকোন সমস্যায় পড়লে, আপনি সোনালী ব্যাংকের যেকোন শাখায় গিয়ে সেই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
আপনি যদি সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র করতে চান, তাহলে আপনার বাড়ির আশেপাশের শাখায় সঞ্চয়পত্র করতে পারেন। এতে আপনার জন্যই ভালো হবে।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর নিয়মাবলী
বাংলাদেশ ব্যাংক সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক তথা সোনালী ব্যাংক লিমিটেডকে সঞ্চয়পত্রের জন্য কিছু নতুন নিয়ম চালু করেছে। এই নিয়ম সকল ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
এই নিয়ম অনুসারে একজন ব্যক্তি তার সবধরণের সঞ্চয় মিলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং ৫ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্রের স্কিমে ৩০ লাখ টাকার বেশি পারবেন না।
তাছাড়া নতুন সঞ্চয়পত্রের আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি ৫ লক্ষ টাকার বেশি পরিমাণ সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে হলে, সেই ব্যক্তিকে গত বছরের আইকর রিটার্ন পত্র জমা করতে হবে। তবে ৫ লক্ষ টাকার কম সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে টিন সার্টিফিকেট বা আয়কর রিটার্নের কোন কাগজপত্র দেখাতে হবে না।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র মুনাফার হার
বর্তমানে সর্বমোট ৪ টি সঞ্চয়পত্র প্রকল্প চালু রয়েছে। এই ৪টি সঞ্চয়পত্রের জন্য মুনাফার হার বিভিন্ন।
- ৫ বছর মেয়াদী সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর মুনাফার হার সর্বনিম্ন ৯.৩৫% এবং সর্বোচ্চ ১১.২৮%। এই হারে আপনি মুনাফা পাবেন যদি আপনি ১৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন।
- ৩ মাস অন্তর মুনাফায় আপনাকে ১ বছর মেয়াদে ১০% এবং ৩ বছর মেয়াদে ১১.০৪% হারে মুনাফা পাবেন। তবে অবশ্যই আপনার মুনাফার উপর ৫-১০% হারে আয়কর কর্তন করা হবে।
- সোনালী ব্যাংক পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্ষেত্রে আপনি ১ম বছরে ৯.৭০% হারে এবং ৫ম বছরে সেটা ১১.৭৬% হারে উঠবে।
- পরিবার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথম বছরে ৯.৫০% হারে সর্বোচ্চ ১১.৫২% হারে সোনালী ব্যাংক আপনাকে মুনাফা প্রদান করে থাকে।
মুনাফার হার সম্পর্কিত একটা টেবিলের মাধ্যমে সকল প্রকারের তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে।
সঞ্চয়পত্রের নাম | সময়সীমা | প্রাইজবন্ড ও ডাক জীবন বীমা ব্যতীত সকল প্রকার সঞ্চয় স্কিমে ক্রমপুঞ্জিভূত বিনিয়োগের পরিমাণ | ||
১৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত | ১৫,০০, ০০১ – ৩০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত | ৩০,০০,০০১ টাকা থেকে তদূর্ধ্ব | ||
৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র | ১ম বৎসরান্তে | ৯.৩৫% | ৮.৫৪% | ৭.৭১% |
২য় বৎসরান্তে | ৯.৮০% | ৮.৯৫% | ৮.০৮% | |
৩য় বৎসরান্তে | ১০.২৫% | ৯.৩৬% | ৮.৪৫% | |
৪র্থ বৎসরান্তে | ১০.৭৫% | ৯.৮২% | ৮.৮৬% | |
৫ম বৎসরান্তে | ১১.২৮% | ১০.৩০% | ৯.৩০% | |
৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র | ১ম বৎসরান্তে | ১০.০০% | ৯.০৬% | ৮.১৫% |
২য় বৎসরান্তে | ১০.৫০% | ৯.৫১% | ৮.৫৬% | |
৩য় বৎসরান্তে | ১১.০৪% | ১০.০০% | ৯.০০% | |
পেনশনার সঞ্চয়পত্র | ১ম বৎসরান্তে | ৯.৭০% | ৮.৮৭% | ৮.০৪% |
২য় বৎসরান্তে | ১০.১৫% | ৯.২৮% | ৮.৪২% | |
৩য় বৎসরান্তে | ১০.১৫% | ৯.৭৪% | ৮.৮৩% | |
৪র্থ বৎসরান্তে | ১১.২০% | ১০.২৪% | ৯.২৯% | |
৫ম বৎসরান্তে | ১১.৭৬% | ১০.৭৫% | ৯.৭৫% | |
পরিবার সঞ্চয়পত্র | ১ম বৎসরান্তে | ৯.৫০% | ৮.৬৬% | ৭.৮৩% |
২য় বৎসরান্তে | ১০.০০% | ৯.১১% | ৮.২৫% | |
৩য় বৎসরান্তে | ১০.৫০% | ৯.৫৭% | ৮.৬৬% | |
৪র্থ বৎসরান্তে | ১১.০০% | ১০.০৩% | ৯.০৭% | |
৫ম বৎসরান্তে | ১১.৫২% | ১০.৫০% | ৯.৫০% |
উপরের ছক অনুসারে সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র থেকে ছকের দেখানো মুনাফার হারে একজন গ্রাহক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।
৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
পাঁচ বছর মেয়াদী সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষে একজন প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিক একক বা যুগ্ম নামে ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।
অপরদিকে, প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো মৎস্য খামার, হাঁস-মুরগীর খামার, পেলিটেড পোলট্রি ফিডস্ উৎপাদন, বীজ উৎপাদন, স্থানীয় উৎপাদিত বীজ বিপণন, গবাদি পশুর খামার, দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার, ব্যাঙ উৎপাদন খামার, উদ্যান খামার প্রকল্প, রেশম গুটিপোকা পালনের খামার, ছত্রাক উৎপাদন এবং ফল ও লতা পাতার চাষীরা ৫ বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
পরিবার সঞ্চয়পত্র
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর ক্ষেত্রে পরিবার সঞ্চয়পত্র করতে পারবেন যাদের বয়স ১৮ বছরের থেকে বেশি। কিন্তু, পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬৫ বছরের উর্দ্ধে সকল বাংলাদেশী পরিবার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
ব্যক্তি পর্যায়ে
একজন প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিক একক বা যুগ্ম নামে ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।
প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে
অটিস্টিকদের জন্য প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা যে সকল প্রতিষ্ঠান অটিস্টিকদের সহায়তায় কাজ করে। তবে শর্ত থাকে যে, মুনাফার অর্থ অটিস্টিকদের সহায়তা কাজে ব্যয় হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট জেলা সমাজ সেবা অফিস হতে প্রত্যয়নকৃত হতে হবে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র
সোনালী ব্যাংক পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করার জন্য আপনাকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সরকারের বিভিন্ন খাতে চাকরী করতে হবে, অন্যথায় আপনি পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন না। আপনি যদি –
সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত,আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পিআরএল ভোগরত/ অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবী, সুপ্রীম কোর্টের পিআরএল ভোগরত/ অবসরপ্রাপ্ত মাননীয় বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর পিআরএল ভোগরত/ অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং উল্লিখিত ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভূক্ত মৃত চাকুরীজীবীদের পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী/স্ত্রী/সন্তানগণ।
কোন প্রকার সঞ্চয়পত্রে কত টাকা বিনিয়োগ করা যায় ?
সোনালী ব্যাংকের সোনালী ব্যাংক থেকে আপনি বিভিন্ন প্রকারের সঞ্চয়পত্রে বিভিন্ন প্রকারে টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন। বিভিন্ন প্রকারের সঞ্চয়পত্রের ক্রয়সীমা নিম্নরূপ-
ক্রমিক নং | সঞ্চয় প্রকল্পের নাম | সর্বনিম্ন ক্রয়সীমা (টাকা) | সর্বোচ্চ ক্রয়সীমা (টাকা) | ||
ব্যক্তি পর্যায়ে | প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ | ||||
একক নামে | যুগ্ম নামে | ||||
১ | ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র | ১ লক্ষ | ৩০ লক্ষ | ৬০ লক্ষ | উর্দ্ধসীমা নাই |
২ | ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র | ১০ টাকা | ৩০ লক্ষ | ৬০ লক্ষ | উর্দ্ধসীমা নাই |
৩ | পরিবার সঞ্চয়পত্র | ১০ হাজার | ৪৫ লক্ষ | – | – |
৪ | পেনশনার সঞ্চয়পত্র | ৫০ হাজার | ৫০ লক্ষ | – | – |
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা উত্তোলন
সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করার অনেক সুবিধা আছে। তবে এই সঞ্চয়পত্রের আরও একটি বড় সুবিধা হচ্ছে, আপনার মুনাফা প্রতি মাসে / নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্যাংক একাউন্টে স্বয়ংক্রীয়ভাবে জমা হবে।
আপনি চাইলে সোনালী ব্যাংক সঞ্চয় থেকে চেক বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আপনার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
আগের দিনের মতো এখন আর দাড়িয়ে থেকে মুনাফা তুলতে হবে না। এমনকি মাসিক মুনাফা আপনি চাইলে ব্যাংকের চেক বা ডেভিড কার্ডের মাধ্যমেও উঠাতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস ২০২৪ | খোলার নিয়ম ও সুবিধাসমূহ
তবে ব্যাংকের চেক বা ডেভিড কার্ডের মাধ্যমে উঠাতে আলাদা চার্জ নিয়ে থাকে। সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র চালু করা সুবিধা আছে। সোনালী ব্যাংকের অর্থনীতি অনেক বড়, তাই এই ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এজন্য বর্তমান সময়ে বলা হয়ে থাকে সহজ ও নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এ বিনিয়োগ করতে পারা অনেক লাভদায়ক।
বর্তমানে ১০টি প্রকল্পের মধ্যে ৪টি সঞ্চয়প্রকল্প চালু রয়েছে। এই ৪টি বিনিয়োগ প্রকল্পই সাধারণ জনগণের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিচে বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের চালু থাকা সঞ্চয়পত্র প্রকল্পের মেয়াদ ও প্রবর্তনকাল উল্লেখ্য করা হলো।
ক্রমিক নং | সঞ্চয়পত্রের নাম | মেয়াদ (সাল) | প্রবর্তন (সাল) |
---|---|---|---|
১ | ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র | ৫ | ১৯৭৭ |
২ | পরিবার সঞ্চয়পত্র | ৫ | ২০১০ |
৩ | ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র | ৩ | ১৯৯৮ |
৪ | পেনশনার সঞ্চয়পত্র | ৫ | ২০০৪ |
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র এর জন্য দরকারি কাগজপত্র
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ক্রয় করার জন্য নিচের ডকুমেন্ট / কাগজপত্রের দরকার হবে। আপনি ক্রয় করা আগে সবকিছু দেখে শুনে যাবেন, যাতে আপনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে সুবিধা হয়।
১। আবেদন ফরম
সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য আপনাকে একটি আবেদন ফরম লাগবে। এই ফরমটি আপনি বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংক বাদে সকল তফসিলিভুক্ত ব্যাংকে পেয়ে যাবেন অথবা সঞ্চয় ব্যুরোর অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। আপনি চাইলে ডাকঘর থেকে আবেদনপত্রটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
উপরের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে আপনি সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য যে আবেদন ফরম দরকার, সেই ফরমটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
২। জাতীয় পরিচয়পত্র ( গ্রাহক ও নমিনি)
জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে আপনাকে এখানে দুইজনের জাতীয় পরিচয়পত্র মিলে সর্বমোট দুই কপি করে মোট ৪ কপি লাগবে। দুইজনের একজন যিনি সঞ্চয়পত্র কিনবেন এবং অপরজন হচ্ছে যিনি সঞ্চয়পত্র ক্রয় করবেন তার কাছের একজনকে নমিনি করবেন।
যাকে তিনি নমিনি করবেন তা ভোটার আইডি কার্ডের ২ কপি ফটোকপি লাগবে। নমিনি হিসেবে গ্রাহক তার ছেলে/ মেয়ে/ কাছের কাউকে রাখতে পারবেন।
৩। গ্রাহকের টিআইএন সার্টিফিকেট
সকল গ্রাহকের জন্য টিআইএন সার্টিফিকেট লাগে না। তবে যাদের আয় ২ লক্ষের বেশি শুধু তাদের টিআইএন সার্টিফিকেট লাগবে। আপনি যেকোনো কম্পিউটারের দোকান থেকে আপনার জন্য টিআইএন সার্টিফিকেট করে নিতে পারবেন।
বি:দ্র: বাংলাদেশের সকল ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ ব্যাংকে হিসাব থাকতে হবে। TIN সার্টিফিকেট ব্যতীত ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) টাকার একটি সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা যাবে। সঞ্চয়পত্রের মুনাফার টাকা গ্রাহকের হিসাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হবে।
৪। নমিনি নাবালক হলে প্রত্যয়নপত্র
নমিনি হিসেবে যদি কেউ কোনো নাবালককে কেউ নমিনি বানাতে চায়, সেক্ষেত্রে তার প্রত্যয়নপত্র গ্রহনযোগ্য হবে। এই প্রত্যয়পত্র হিসেবে আপনি নাবালকে তার চাচা দাদা, খালু, খালা ইত্যাদি যে কোন ব্যক্তি এনআইডি ও তার তথ্য ও স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে।
৫। হিসাবে চেক বই
আপনি যদি কোনো ব্যাংকে একাউন্ট করে থাকেন, তাহলে সেক্ষেত্র আপনার হিসাবের চেক বইয়ে ফটোকপি লাগবে। আর যদি না একাউন্ট থাকে তাহলে আপনাকে ওই ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি সেই চেকের ফটোকপি করে নিতে পারবেন।
৬। পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে
পেনশনার সঞ্চয়পত্র হলে আপনার মুনাফা অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের থেকে বেশি। তাছাড়া পেনশনার সঞ্চয়ের জন্য কোনো ভ্যাট কাটে না। তাছাড়া আপনি যদি পারিবারিক অর্থ দিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করে থাকেন তাহলে উপযুক্ত প্রমাণাদি দেখিয়ে পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ভাঙ্গানোর নিয়ম
গ্রাহকের ইচ্ছানুযায়ী একজন গ্রাহক যেকোনো সময়, সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র যেকোনো সময়ে ভাঙ্গাতে পারবেন। সঞ্চয়পত্র ভেঙ্গে আসল টাকা তুলতে চাইলে, আপনাকে ব্যাংকে জানাতে হবে। বাকি সকল কাজ ব্যাংক নিজেই করবে। তবে, নির্ধারিত সময়ের আগে ভাঙ্গালে আপনাকে নির্ধারিত চার্জ গুনতে হবে।
শেষকথা
আশাকরি সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র সম্পর্কে যা জানার তা জেনে গেছেন, যদি তারপরও কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচের মন্তব্য বক্সে মন্তব্য করে যাবেন।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র সম্পর্কিত কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs):
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র কী?
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্র একটি বিনিয়োগের মাধ্যম, যা সরকার প্রদত্ত একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে মুনাফা অর্জনের সুযোগ দেয়। এটি ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের জন্য সঞ্চয় ও বিনিয়োগের একটি নিরাপদ উপায়।
সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কত?
সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয় এবং বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত হার অনুযায়ী পরিচালিত হয়। আপনি বর্তমান মুনাফার হার জানতে সোনালী ব্যাংকের নিকটস্থ শাখা বা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে তথ্য পেতে পারেন।
সঞ্চয়পত্র কি আগে ভাঙানো সম্ভব?
হ্যাঁ, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ভাঙানো সম্ভব। তবে, এতে কিছু জরিমানা বা মুনাফার অংশ কেটে নেওয়া হতে পারে।
সঞ্চয়পত্রে অনলাইনে বিনিয়োগ করা যায় কি?
বর্তমানে সোনালী ব্যাংক সঞ্চয়পত্রে অনলাইন বিনিয়োগের সুবিধা নেই। বিনিয়োগ করতে হলে আপনাকে ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সরাসরি আবেদন করতে হবে।