আপনি কি ইসলামিক ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজছেন? হুম, এই অনুচ্ছেদে আপনি ইসলামী ব্যাংকে ডিপিএস খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সকল বিষয় আলোচনা করবো।
আপনারা হয়তো অনেকে জানেন না, ইসলামী ব্যাংক অন্য ব্যাংকের মতো নিজেদের ইসলামিক ডিপিএস সিস্টেম চালু করেছে। ফলে সকল ইসলামিক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা, ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের মূলধন সঞ্চয় করতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস কি?
ইসলামী ব্যাংকের অধীনে অর্থ / সম্পত্তি / মূলধন সঞ্চয় রাখাকে ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস বলে। আপনি হয়তো অবগত থাকবেন, ইসলামী ব্যাংক মূলত সুদের ব্যবসা করেনা। তাই এরা নির্দিষ্ট শর্ত বেঁধে দেয়।
ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেমে কিছু নিয়ম বা শর্ত বেঁধে দিয়ে Islami Bank DPS প্রক্রিয়া চালু করেছে। এই অর্থ আপনি বিভিন্ন খাতে ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার দরকার অনুযায়ী আপনি এই অর্থ বের করতেও পারবেন।
তবে, ইসলামী ব্যাংক এর অধীনে যারা ডিপিএস চালু করবেন, তাদের জন্য কিছু শর্ত এবং কিছু নিয়ম রয়েছে। এই সকল নিয়ম না জানা থাকলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।
নিচে আমরা বিভিন্ন মেয়াদের ডিপিএসের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
বিভিন্ন মেয়াদের ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস
ইসলামী ব্যাংকের অধীনে গ্রাহকেরা বিভিন্ন মেয়াদে ডিপিএস চালু করতে পারবেন। মেয়াদ অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদের ডিপিএসের মূনাফার হার বিভিন্ন হয়ে থাকে। তবে, প্রতিটি ডিপিএসের ক্ষেত্রে ট্যাক্স যুক্ত হবে।
ইসলামী ব্যাংক মূলত ৮ প্রকারের ডিপিএস একাউন্ট চালু করেছেন। যেমন-
- মুদারাবা স্পেশাল সেভিংস (পেনশন) একাউন্ট
- মুদারাবা মোহর সেভিংস একাউন্ট
- মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট একাউন্ট
- মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট রিসিপ্ট
- মুদারাবা সেভিংস বন্ড
- মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড একাউন্ট
- মুদারাবা হজ সেভিংস একাউন্ট এবং
- ওয়াকফ ক্যাশ ডিপোজিট একাউন্ট
প্রতিটি ডিপিএস সিস্টেম বিভিন্ন মেয়াদের হয়ে থাকে। আপনি মূলত ৩, ৫, ১০ বছর মেয়াদী ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস চালু করতে পারবেন। উপরে উল্লেখিত সকল প্রকারের ডিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
১। মুদারাবা স্পেশাল সেভিংস (পেনশন) একাউন্ট
ইসলামী ব্যাংকের একজন গ্রাহক মাসিক ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০, ১০০০ ২০০০, ৩০০০ করে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত জমা করা যাবে।
মুদারাবা স্পেশাল সেভিংস একাউন্টের সময়কাল নির্ধারন করা হয়েছে ৩, ৫ ও ১০ বছর। একজন গ্রাহক যদি এই প্রকারের ডিপিএস একাউন্ট চালু করতে চায়, তাহলে ৩, ৫, এবং ১০ বছরের জন্য ডিপিএস একাউন্ট চালু করতে পারবেন।
প্রতিটি মেয়াদের জন্য বিভিন্ন প্রকারের ইন্টারেস্ট রেট থাকে। আপনি যদি ১০ বছরের মুদারাবা স্পেশাল সেভিংস একাউন্ট করেন, তাহলে ব্যাংক আপনাকে প্রায় ৭% হারে মূনাফা দিবে। আপনি যদি ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস একাউন্ট চালু করেন, তাহলে ব্যাংক ৬.৫% হারে এবং ৩ বছরে আপনাকে প্রায় ৬% হারে মূনাফা দিবে।
মেয়াদ | মাসিক কিস্তি | মুনাফার হার |
---|---|---|
৩ বছর মেয়াদী | মাসিক ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০, ১০০০ ২০০০, ৩০০০ করে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত। | ৬% |
৫ বছর মেয়াদী | মাসিক ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০, ১০০০ ২০০০, ৩০০০ করে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত। | ৬.৫% |
১০ বছর মেয়াদী | মাসিক ১০০, ২০০, ৩০০, ৪০০, ৫০০, ১০০০ ২০০০, ৩০০০ করে সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত। | ৭% |
২। মুদারাবা মোহর সেভিংস একাউন্ট
মুদারাবা মোহর সেভিংস একাউন্ট তৈরি করার জন্য গ্রাহককে ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারবেন।
এই প্রকারের সেভিংস একাউন্টের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ ও ১০ বছর। মুদারাবা মোহর সেভিংস একাউন্ট চালু করতে হলে আপনাকে ৫ এবং ১০ বছরের জন্য ডিপিএস একাউন্ট চালু করতে হবে।
প্রতিটি ডিপিএস একাউন্টের জন্য আলাদা আলদা ইন্টারেস্ট রেট থাকে। যেমন- আপনি যদি ৫ বছরের জন্য মুদারাবা মোহর সেভিংস একাউন্ট চালু করেন, তাহলে আপনাকে ব্যাংক ৫.৭% হারে মূনাফা প্রদান করবে এবং যদি ১০ বছরের জন্য ডিপিএস একাউন্ট চালু করেন, তাহলে ৬.৫% হারে মূনাফা প্রদান করবে।
মেয়াদ | মাসিক কিস্তি | মুনাফার হার |
---|---|---|
৫ বছর মেয়াদী | মাসিক ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। | ৫.৭% |
১০ বছর মেয়াদী | মাসিক ৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত। | ৬.৫% |
৩। মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট একাউন্ট
মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট একাউন্ট চালু করতে হলে গ্রাহককে প্রতিমাসে ১ লক্ষ গুনিতক হারে টাকা জমা করতে পারবেন।
এই প্রকারের ডিপোজিট একাউন্টের মেয়াদ ৩ থেকে ৫ বছরের হয়ে থাকে। আপনি যদি মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট একাউন্ট করতে চান, তাহলে ৩ থেকে ৫ বছরের উদ্দেশ্য একাউন্ট চালু করতে হবে।
এই প্রকারের ডিপোজিট একাউন্টের জন্য প্রতি মেয়াদে আলাদা আলাদা মূনাফা প্রদান করা হয়। আপনি যদি ৩ বছরের ডিপিএস একাউন্টের জন্য ব্যাংক ৭% হারে মূনাফা প্রদান করবে। অন্যদিকে, আপনি যদি ৫ বছরের জন্য এই ডিপিএস একাউন্ট চালু করেন, তাহলে ব্যাংক আপনাকে ৭.৫% হারে মূনাফা প্রদান করবে।
মেয়াদ | মাসিক কিস্তি | মুনাফার হার |
---|---|---|
৩ বছর মেয়াদী | মাসিক ১লক্ষ থেকে ১লক্ষের গুনিতক হারে টাকা জমা করতে পারবেন। | ৭% |
৫ বছর মেয়াদী | মাসিক ১লক্ষ থেকে ১লক্ষের গুনিতক হারে টাকা জমা করতে পারবেন। | ৭.৫% |
৪। মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট রিসিপ্ট
মুদারাবা টার্ম ডিপোজিট রিসিপ্ট একাউন্ট তৈরি করার জন্য মিনিমাম টাকা হচ্ছে ১হাজার টাকা। এক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস করতে আগ্রহী গ্রাহক ৩, ৬ মাস, ১,২,ও ৩ বছর মেয়াদী ডিপিএস একাউন্ট চালু করতে পারবেন।
প্রতিটি বিভিন্ন মেয়াদের ডিপিএস একাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা মূনাফা প্রদান করা হয়। ব্যাংক ৩ মাসে ৫.৫%, ৬ মাসে ৫.৫% হারে, ১ বছরে ৫.৬%, ২বছরে ৫.৮% এবং ৩ বছরে ৬% হারে মুনাফা প্রদান করবে।
মেয়াদ | মাসিক কিস্তি | মুনাফার হার |
---|---|---|
৩ মাস মেয়াদী | মাসিক সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা এবং এর গুনিতক হারে। | ৫.৫% |
৬ মাস মেয়াদী | মাসিক সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা এবং এর গুনিতক হারে। | ৫.৫% |
১ বছর মেয়াদী | মাসিক সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা এবং এর গুনিতক হারে। | ৫.৬% |
২ বছর মেয়াদী | মাসিক সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা এবং এর গুনিতক হারে। | ৫.৮% |
৩ বছর মেয়াদী | মাসিক সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা এবং এর গুনিতক হারে। | ৬% |
৫। মুদারাবা সেভিংস বন্ড
মুদারাবা সেভিংস বন্ড একাউন্ট করতে হলে প্রতিমাসে ১০০০, ৫০০০, ২৫০০০, ৫০০০০, ১০০০০০, ৫০০০০০, ১০০০০০০ টাকা জমা করতে পারবেন। এই একাউন্টের মেয়াদ ৫ ও ৮ বছর হয়ে থাকে। এই একাউন্টটি আপনি ব্যক্তিগত ও জয়েন্ট একাউন্ট হিসেবে খোলা যাবে।
মুদারাবা সেভিংস বন্ড মূলত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে খোলা যেতে পারে। এই একাউন্ট সবাই খুলতে পারেনা। তবে যদি আপনি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হিসেবে একাউন্ট খুলেন তাহলে আপনি এই একাউন্ট খুলতে পারবেন।
মুদারাবা সেভিংস বন্ড একাউন্টের ৫ বছর মেয়াদে যদি সেভিংস একাউন্ট চালু করেন, তাহলে ৫.৭৫% হারে এবং ৮ বছরের জন্য একাউন্ট চালু করলে ৬% হারে মূনাফা প্রদান করা হয়।
মেয়াদ | মাসিক কিস্তি | মুনাফার হার |
---|---|---|
৫ বছর মেয়াদী | প্রতিমাসে ১০০০, ৫০০০, ২৫০০০, ৫০০০০, ১০০০০০, ৫০০০০০, ১০০০০০০ টাকা। | ৫.৭৫% |
৮ বছর মেয়াদী | প্রতিমাসে ১০০০, ৫০০০, ২৫০০০, ৫০০০০, ১০০০০০, ৫০০০০০, ১০০০০০০ টাকা। | ৬% |
৬। মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড একাউন্ট
মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড ডিপিএস একাউন্ট চালু করতে হলে ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদেরকে প্রতিমাসে ২৫০০০, ৫০০০০, ১০০০০০, ২০০০০০, ৫০০০০০, এবং ১০০০০০০ টাকা সঞ্চয় করতে হবে।
আপনি মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড একাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে ৫ ও ১০ বছরের জন্য সেভিংস একাউন্ট চালু করতে হবে। এই একাউন্ট শুধুমাত্র প্রবাসী বাংলাদেশী, নিজের জন্য এবং তাদের নাবালক সন্তানদের জন্য তৈরি করতে পারবেন।
মুদারাবা এনআরবি সেভিংস বন্ড একাউন্টের ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএসের মুনাফা হার ৫.৮% এবং ১০ বছর মেয়াদী ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস এর মূনাফা হার ৬.৫%।
মেয়াদ | মাসিক কিস্তি | মুনাফার হার |
---|---|---|
৮ বছর মেয়াদী | প্রতিমাসে ২৫০০০, ৫০০০০, ১০০০০০, ২০০০০০, ৫০০০০০, এবং ১০০০০০০ টাকা। | ৫.৮% |
১০ বছর মেয়াদী | প্রতিমাসে ২৫০০০, ৫০০০০, ১০০০০০, ২০০০০০, ৫০০০০০, এবং ১০০০০০০ টাকা। | ৬.৫% |
৭। মুদারাবা হজ সেভিংস একাউন্ট
মুদারাবা হজ সেভিংস একাউন্ট করতে হলে আপনি ১-২৫ বছর পর্যন্ত রাখতে পারেন। এই একাউন্টের মুনাফা হার ৭%। এই ধরণের মূনাফার একাউন্ট তৈরি করতে হলে আপনাকে একজন মুসলিম হতে হবে। অন্যথায়, আপনি এই ধরণের একাউন্ট খুলতে পারবেন না।
৮। ওয়াকফ ক্যাশ ডিপোজিট একাউন্ট
ওয়াকফ ক্যাশ ডিপোজিট একাউন্টের জন্য মিনিমাম ডিপোজিট ১০,০০০ টাকা। এই টাকা আপনাকে প্রতিমাসে দিতে হবে। বাংলাদেশের যেকোন নাগরিক এই একাউন্ট করতে পারবে। ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস এর ওয়াকফ ক্যাশ ডিপোজিট রেট বা প্রোফিট রেট প্রায় ৭%।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস এর কিস্তির হার
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস এর কিস্তির হার বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। উপরে উল্লেখিত ক্ষেত্র বিশেষে আপনাকে বিভিন্ন প্রকারের কিস্তি প্রদান করতে হতে পারে।
আপনাকে অবশ্যই ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খোলার সময়ই ডিপিএস এর কিস্তির হার জেনে নিতে হবে। যদি আপনি না জেনে ডিপিএস একাউন্ট চালু করেন, পরে তখন টাকা না দিতে পারলে বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যখন আপনি ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট চালু করবেন, তখন কিস্তির হার নির্ধারনের পাশাপাশি ডিপিএসে মেয়াদও নির্ধারণ করতে হয়। আপনার জন্য যে অপশন থাকবে:
- আপনি চাইলে ৫০০ টাকার গুনিতক সর্বোচ্চ ১০০,০০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করতে পারেন। তবে অবশ্যই সেটা ৫০০ এর গুনিতক আকারে হতে হবে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী মাসিক কিস্তি বা সঞ্চয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারবেন।
- ব্যাংকের RDS ও UPDS সদস্যরা চাইলে ১০০ টাকার কিস্তিতে হিসাব খোলার সুযোগ পাবেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খোলার যোগ্যতা
ইসলামী ব্যাংকের অধীনে ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য কিছু যোগ্যতা রয়েছে। যা না থাকলে আপনি ইসলামী ব্যাংকে কোনো প্রকারের একাউন্ট খুলতে পারবেন না। একজন ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক হতে হলে আপানাকে-
- বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
- অপ্রাপ্ত বয়ষ্করা অভিভাবকের অধীনে একাউন্ট করতে পারবে।
- ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যও একাউন্ট তৈরি করার সুযোগ রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে যা যা লাগবে
ইসলামী ব্যাংকের অধীনে যদি কেউ ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য আসে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই গ্রাহকের এবং নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র / ড্রাইভিং লাইসেন্স / পাসপোর্ট ইত্যাদির যেকোনো একটির দুই কপি ফটোকপি। গ্রাহক ও নমিনির ২কপি পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা রঙিন ছবি।
আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য নিচে লিস্ট আকারে সকল তথ্য প্রদান করা হলো-
- গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র / ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট ইত্যাদি ফটোকপি।
- গ্রাহক ও নমিনির ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
- অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে আগ্রহীর জন্ম নিবন্ধনপত্র। সাথে অভিভাবকের আইডি কার্ড এর ফটো কপি এবং পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার কিছু নিয়ম রয়েছে। যা জেনে রাখলে অনেক সুবিধা হয়। আপনি যখন ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট খুলতে যাবেন, তখন সকল তথ্য জেনে যাওয়া ভালো।
প্রথমে আপনাকে আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেতে হবে। তারপর ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো কর্মকর্তাকে গিয়ে বলবেন আপনি কি ধরনের একাউন্ট তৈরি করতে চান।
তখন উক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে একটি ফরম দিবে, সেই ফরমটি ভালো করে পূরণ করলেই আপনি ইসলামী ব্যাংকের অধীনে একটি ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট চালু করতে পারবেন।
আবেদন ফরমটি ভালো করে পূরণ করে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ ব্যাংকে জমা দিলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার নামে একটি ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলে দিবেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস সুবিধা
প্রতিটি ব্যাংকের অধীনে ডিপিএস খুললে আপনি যেমন সুবিধা পাবেন, ঠিক তেমনি ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস এর কিছু সুবিধা রয়েছে। যা নিচে তুলে ধরা হলো-
- গ্রাহক কোনো কারণে ডিপিএস হস্তান্তর করতে চাইলে তা সহজেই করা যায়।
- গ্রাহক ইচ্ছে করলেই সংশ্লিষ্ট শাখায় উক্ত ব্যক্তির নামে সেভিংস একাউন্ট থাকলে, সেখান থেকে সরাসরি ডিপিএস এর কিস্তি পরিশোধ করা যাবে।
- ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস এর মেয়াদ শেষ হলে উক্ত ব্যক্তি যদি না উত্তোলন করে, তাহলে সরাসরি সেভিং একাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
- ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস শরীয়া ভিত্তিক হওয়ার কারণে সুদের ব্যপারে যারা চিন্তিত থাকেন তাদের জন্য ভালো মাধ্যম হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক।
শেষকথা
ইসলামী ব্যাংকের অধীনে আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে চান, তাহলে আপনাকে আপনার নিকটস্থ শাখায় গিয়ে কথা বলতে হবে। তারপর, আপনার প্রয়োজনীয় ডটুমেন্টস জমা দিলেই আপনি সেভিংস একাউন্ট খুলতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস সম্পর্কিত FAQs:
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস কী?
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস হলো একটি সঞ্চয় পরিকল্পনা, যা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নিয়মিত মাসিক জমা রেখে ভবিষ্যতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে। এটি শরিয়াহ ভিত্তিক সঞ্চয় স্কিম।
ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন?
ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র, ২ কপি ছবি, এবং ব্যাংকের নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হয়।
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএসে কত টাকা জমা দেওয়া যায়?
ইসলামী ব্যাংক ডিপিএসে মাসিক সর্বনিম্ন জমা ৫০০ টাকা থেকে শুরু হয়। এর উপরের সীমা ব্যাংক নির্ধারণ করে থাকে।
ডিপিএস এর মেয়াদ কত?
ডিপিএস-এর মেয়াদ সাধারণত ৩, ৫, ৮, বা ১০ বছর হতে পারে। গ্রাহক তার প্রয়োজন অনুযায়ী মেয়াদ বেছে নিতে পারেন।
ডিপিএস থেকে কখন টাকা উত্তোলন করা যায়?
ডিপিএস মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর টাকা উত্তোলন করা যায়। তবে, বিশেষ পরিস্থিতিতে আংশিক বা পূর্ণ টাকা পূর্বেই উত্তোলন করা যেতে পারে, তবে তা নির্দিষ্ট শর্তের ওপর নির্ভরশীল।
ডিপিএস-এর অর্থ কি আমি অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে পারবো?
হ্যাঁ, ডিপিএস-এর অর্থ মেয়াদ পূর্ণ হলে আপনার অন্য ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা যাবে।