সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর সম্পর্কে বিস্তারিত

আপনি কি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? আপনি যদি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর বিষয়ে সকল তথ্য যেমন- ইন্টারেস্ট রেট, কে / কারা এই ডিপিএস করতে পারবেন, ৫ বছর মেয়াদের কয়টি ডিপিএস রয়েছে।

এই অনুচ্ছেদে আপনি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর কি?

সোনালী ব্যাংক, তাদের গ্রাহকদের জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকারের স্কীম নিয়ে আসে। তবে মূলতঃ ডিপিএস প্রক্রিয়াটি অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।

সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বানিজ্যিক ব্যাংক। এই ব্যাংক ৫ বছর মেয়াদের একটি টাকা সঞ্চয়ের একটি স্কীম চালু করেছে। ফলে গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর অর্থ ব্যাংকে জমা করে, পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেই অর্থের সাথে কিছু মূনাফা যুক্ত করে তার গ্রাহককে ফেরত দেয়।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৫ বছর গ্রাহকের অর্থ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে। সেই বিনিয়োগ করার অর্থ থেকে আপনাকে মূনাফার কিছু অংশ প্রদান করে থাকে।

যেহেতু, সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাণিজ্যিক ব্যাংক, তাই প্রায় বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ৫ বছর মেয়াদী সোনালী ব্যাংক ডিপিএস করতে বেশি আগ্রহী।

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর মেয়াদের একাউন্ট

সোনালী ব্যাংকে বিভিন্ন মেয়াদের ডিপিএস স্কীম রয়েছে। প্রতিটি ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করতে বিভিন্ন প্রকারের মেয়াদ রয়েছে। তবে সোনালী ব্যাংক গ্রাহকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় একাউন্ট হচ্ছে ৫ বছর মেয়াদের ডিপিএস একাউন্টগুলো।

সোনালী ব্যাংকে ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস স্কীমের মধ্যে ভিন্ন প্রকারের একাউন্ট রয়েছে। প্রয়োজন অনুসারে, প্রতিটি একাউন্টকে আলাদা করা হয়েছে। ফলে গ্রাহকরা তাদের দরকার অনুযায়ী সোনালী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

সোনালী ব্যাংকের যেসকল ডিপিএস একাউন্ট ৫ বছর মেয়াদী, আপনি নিচের নিস্টে সকল সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর মেয়াদের একাউন্ট সম্পর্কে জানতে পারবেন।

১। সোনালী সঞ্চয় স্কীম

সোনালী সঞ্চয় স্কীম হচ্ছে সোনালী ব্যাংক ৫ বছর মেয়াদী একটি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস স্কীম। আপনি যদি সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করতে চান, তাহলে এই সঞ্চয় স্কীম সম্পর্কে বিস্তারিত জানা উচিত।

আপনি যখন ব্যাংকে ৫ বছর মেয়াদী একটি ডিপিএস একাউন্টের খোঁজ করে থাকেন, তাহলে আপনার চোখের সামনে সোনালী ব্যাংকের “সোনালী সঞ্চয় স্কীম” হাতছানি দিবে।

সোনালী সঞ্চয় স্কীমে, গ্রাহককে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ এর গুণিতক আকারে প্রদান করতে পারবেন। তবে, এই স্কীমের সর্বোচ্চ সঞ্চয়ের পরিমাণ ১০,০০০ টাকা।

আপনি এই স্কীমের জন্য একাউন্ট চালু করলে আপনাকে ব্যাংক চক্রবৃদ্ধি অনুসারে ৬.৫ শতাংশ সুদ প্রদান করবে।

নামমাসিক কিস্তিসুদের হারমেয়াদ
সোনালী সঞ্চয় স্কীম৫০০ – ১০,০০০ টাকা। অবশ্যই ৫০০ এর গুনিতক আকারে কিস্তি দিতে হবে।৬.৫ শতাংশ (চক্রবৃদ্ধি )৫ বছর
স্বাধীন সঞ্চয় স্কীম

২। অনিবাসী আমানত স্কীম

অনিবাসী সঞ্চয় স্কীম হচ্ছে সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর মেয়াদী একটি ডিপিএস স্কীম। গ্রাহক চাইলে এই স্কীমকে ১০ বছর মেয়াদী করতে পারবেন।

প্রতিমাসে গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কিস্তি দিতে হয়। যারা তাদের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদী স্কীম করতে চান, তাদের ক্ষেত্রে “অনিবাসী আমানত স্কীম” অনেক ভালো হবে।

এই ডিপিএস স্কীমের ক্ষেত্রে, একজন গ্রাহককে প্রতিমাসে ৫০০০, ৬০০০, ৭০০০, ৮০০০, ৯০০০, ১০০০০, ১১০০০, ১২০০০, ১৩০০০, ১৪০০০ এবং ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করা সুযোগ পাবেন। এই স্কীমের ডিপিএস রেট সরলসুদ অনুসারে ৬.৫ শতাংশ।

নামমাসিক কিস্তিসুদের হারমেয়াদ
অনিবাসী আমানত স্কীম৫০০০, ৬০০০, ৭০০০, ৮০০০, ৯০০০, ১০০০০, ১১০০০, ১২০০০, ১৩০০০, ১৪০০০ এবং ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করা সুযোগ পাবেন।৭ শতাংশ (সরলসুদ)৫/১০ বছর
অনিবাসী আমানত স্কীম

৩। স্বাধীন সঞ্চয় স্কীম

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস স্কীমের মধ্যে “স্বাধীন সঞ্চয় স্কীম” অন্যতম। সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকেরা ইচ্ছে করলে স্বাধীন সঞ্চয় স্কীম একাউন্ট চালু করতে পারে।

কেননা, এই স্কীমে শুরুতে আপনাকে ১০০০ টাকা জমা রাখতে হবে, পরে আপনি আপনার ইচ্ছেমতো টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে, আপনি অন্যান্য সোনালী ব্যাংক ডিপিএস এ এই সুবিধা পাবেন না।

নামমাসিক কিস্তিসুদের হারমেয়াদ
অনিবাসী আমানত স্কীমশুরুতে আপনাকে ১০০০ টাকা জমা রাখতে হবে, পরে আপনি আপনার ইচ্ছেমতো টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন।মুনাফা হারের অতিরিক্ত ৩%।৫/১০ বছর
স্বাধীন সঞ্চয় স্কীম

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট করতে কি কি লাগে?

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর মেয়াদী করতে চাইলে আপনাকে সবার প্রথমে একজন বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।

আপনি যদি একজন বাংলাদেশী নাগরিক হয়ে থাকেন, তাহলে, ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে রাখতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি। এসব কাগজপত্র অবশ্যই যিনি একাউন্ট করবেন তার এবং তার অবর্তমানে যিনি একাউন্টের মালিক হবেন তার হতে হবে।

ডিপিএস একাউন্ট করার আগে আপনাকে আপনার নিকটবর্তী সোনালী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে হবে।

সেই ব্যাংক কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং কোন ডিপিএস একাউন্ট করতে চাইছেন তা বললে আপনি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর বা ১০ বছরের জন্য ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন।

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস কারা খুলতে পারবেন?

সোনালী ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য বেশি কিছু লাগেনা, তবে সবাই এই ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন না।

বাংলাদেশী বাদে পৃথিবীর সকল মানুষ এই ব্যাংকে ডিপিএস একাউন্ট খুলতে পারবেন না। ডিপিএস একাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার পাশাপাশি ডিপিএস একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে। যদি আপনি ব্যাংকের দেওয়া নিয়মকানুন না মানেন, তাহলে আপনি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস একাউন্ট খুলতে পারবেন না।

শেষকথা

ব্যাংক মানেই সুদের ব্যবসা। আপনি যদি ব্যাংকে টাকা সঞ্চয় করতে আগ্রহী না হয়ে থাকেন, তাহলে সেটা আপনার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। সোনালী ব্যাংক ডিপিএস ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস করতে চাইলে আপনাকে উপরে উল্লেখিত সকল তথ্য জেনে একাউন্ট খোলা উচিত।

FAQs: সোনালী ব্যাংক ডিপিএস (৫ বছর)

সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস এর জন্য কত টাকা মাসিক জমা দিতে হয়

সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস-এর জন্য গ্রাহকরা তাদের ইচ্ছামত বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ মাসিক জমা দিতে পারেন, যেমন ৫০০, ১০০০, ২০০০ বা তার বেশি। মাসিক জমার পরিমাণ এবং মেয়াদের উপর নির্ভর করে মুনাফার হার এবং পরিশেষে পাওনা টাকার পরিমাণ নির্ধারিত হয়।

সোনালী ব্যাংক ডিপিএস (৫ বছর) এর মেয়াদ শেষে কী পাওয়া যাবে?

৫ বছর মেয়াদ শেষে আপনি আপনার জমাকৃত অর্থের সাথে জমাকৃত টাকার উপর নির্ধারিত সুদ বা মুনাফা পাবেন। ডিপিএস এর মূলধন এবং সুদ মিলে একটি চূড়ান্ত পরিমাণ হিসেবে গ্রাহককে ফেরত দেওয়া হবে।

ডিপিএস এর জমা যদি নিয়মিত করা না হয়, তবে কী হবে?

যদি আপনি সোনালী ব্যাংক ডিপিএস এর মাসিক কিস্তি সময়মতো জমা না করেন, তবে বিলম্ব ফি প্রযোজ্য হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে কিস্তি জমা না দিলে ডিপিএস বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।

ডিপিএস একাউন্ট কি সময়ের আগে ভাঙানো যাবে?

হ্যাঁ, বিশেষ পরিস্থিতিতে সোনালী ব্যাংকের ডিপিএস একাউন্ট মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ভাঙানো সম্ভব। তবে, এর ফলে কিছু জরিমানা বা মুনাফার হার কমতে পারে, যা ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রযোজ্য।

Leave a Comment